বিশেষ প্রতিনিধি, সাভার,ঢাকা :: সাভারে ১০ বছরের একটি শিশু মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ধর্ষণকারী হিসেবে প্রতিবেশী চাচার নাম প্রকাশ করে মৃত্যুবরণ করেছে। এ ঘটনায় র্যাবে-৪ এর একটি আভিযানিক দল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে নরসিংহপুর বাংলাবাজার এলাকার সিরাজ সরকারের বাড়ি থেকে অভিযুক্ত ধর্ষণকারী সজলকে(২৩) আটক করে র্যাব-৪। আটকের বিষয়টি র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার রাত সাতটার দিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভুক্তভোগী শিশুটি মারা যায়।
ভুক্তভোগী শিশু মারিয়া আক্তার অনন্যা (১০) আশুলিয়ার নরসিংহপুরের একটি মাদ্রাসায় ক্লাস-টু এর ছাত্রী ছিলেন। তার বাবার নাম কামাল হোসেন, সে তার বাবার সাথে আশুলিয়ার নরসিংপুর বাংলাবাজার এলাকার শাজাহান সরকারের বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন।
অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামের ছেলে সজল (২৩) নওগাঁ জেলার পত্নীতলা থানার স্থায়ী বাসিন্দ। সে নরসিংপুর বাংলাবাজার এলাকায় ভুক্তভোগী শিশুর সাথে একই বাড়ির তিনতলায় ভাড়া থাকতো।
ভুক্তভোগী শিশুর খালাতো ভাই পিয়াস বলেন, ‘ঐ পোলা মাইয়াডারে ছাদে নিয়া গেছে ঠিকঠাক করতে, টিকটক করতে করতে ওর সাথে এই ঘটনা ঘটায়ছে। অনন্যা প্রায় মাসখানেক যাবত অসুস্থ ছিলো। অসুস্থ হওয়ার অনেকদিন পরে হাসপাতালে গেছে, তারা তো বুঝতে পারে নাই , গার্জিয়ান বলতে কেউ নাই মাইয়াটার, তার একটা বড় বোইন আছে গার্জিয়ান হিসেবে, সে বিয়া হওয়াতে চোইলা গেছে। তার মা গেছেগা বিদেশ, এইজন্য মাইয়াডা কারো কাছে কিছু বলতে পারেনাই। তাই ওরে কবিরাজ টবিরাজ দেখাইছে। আর ধর্ষণকারী ওদের সাথে একসাথেই থাকতো, পাশাপাশি থাকায় অর সাথে একটু মিল মহব্বত ছিল মাইয়ার বাবার। অর মা তিন দিন আগে আইছে বিদাশ থাইকা। আসার পর পরেই মায়ের কাছে সব কিছু খুইলা কোইছে। পেশাব করতে পারত না ঠিকমতো তার পেশাবের রাস্তা জ্বালাপোড়া করত। পরে হাসপাতালে নেয়া হোইছে। মনে করেন অনেক কষ্ট পাইছে মাইয়াডা’।
অভিযুক্ত সজল জানায়, ‘সাত মাস হোইছে সিরাজ সরকারের বাড়িতে ভাড়া থাকি। এর আগে নরসিংপুর স্ট্যান্ডে থাকতাম। আমি বিয়া করছি এক বছর হোইছে। বউ ইপিজেডে চাকরি করে। আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। মেয়ের বাবার দোকানে আমি বাকি খাই, উনার মেয়ে অসুস্থ আজকে ১৫/২০ দিন থেকে। সে(মেয়ের বাবা) মোবাইল সম্পর্কে কম বুঝে তো প্রায় আমারে ডাক দেয় মোবাইল ঠিক করতে, এইভাবে ধীরে ধীরে সম্পর্ক হয়। মেয়েটাকে আমি আন্টি আন্টি বলতা,ম মেয়েটা আমাকে আঙ্কেল আঙ্কেল বলত। পরে মেয়ের বাবা বলতো তার মেয়েকে টিকটক বানায়া দিতে, শিখাইয়া দিতে। আমি টিকটক কোইরা দিতাম। রাত্রে যদি দুইটার সময় চা খেতে যাইতো তাহলেও কামাল ভাই আমাকে ডাকত, সজল আয় চা খাইতে আয়। টুকটাক কাজে মেয়ের বাবা আমারে ডাকত, সে আমারে ভালো জানতো। শুনলামনাকি জন্ডিস, মাইয়াটা ১০/১৫ দিন যাবত অসুস্থ ছিল, কালকে শুনছি কবিরাজ দেখাইছিল, কবিরাজে নাকি মারছে। কালকের আগের দিন হাসপাতালে নিয়ে গেছিল। আমারেও নিয়ে গেছিল হাসপাতালে। শুনছি চারটার দিকে মারা গেছে, এখন লাস্টে নাকি আমার নাম দিছে মারা যাওয়ার আগে। উপরে আল্লাহ আছে, এখন মানষের কাছে বর্তমানে আমি জানলাম। সত্যি যদি আমি নির্দোষ হয়ে থাকি তাহলে টেস্ট করলে তো আমার ধরা খাবো, মেয়ে যেহেতু বলছে তাই এখন বর্তমান দোষী আমি। তবে আল্লায় যদি চায় তাইলে প্রমাণে বুঝা যাবে যে আমি না।
র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান আজকের দর্পণকে জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার বিরুদ্ধে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
0 মন্তব্যসমূহ